হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় সতর্কতা



✅হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় বাজার করা এবং খাদ্য সামগ্রী সংরক্ষণ ও প্রস্ততির সময় যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখবেন:

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য এখন দেশব্যাপী হোম কোয়ারেন্টিনে থাকছে সবাই। কিন্তু নিত্য প্র‍য়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করতে বাজারে যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে কমবেশি সবারই।পরিবারের কাউকে এই দায়িত্ব নিতে হচ্ছে।তাই বাজার করা থেকে শুরু করে খাবার সংরক্ষণ, প্রস্তুত,পরিবেশনের প্রতিটি ধাপেই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে মানতে হবে বাড়তি সতর্কতা। 

🔵 বাজারে যেহেতু জনসমাগম বেশি তাই বার বার বাজারে না গিয়ে বাজারের লিস্ট তৈরি করে সপ্তাহে ১ দিন বা ২ সপ্তাহে ১ দিন গিয়ে প্রয়োজনীয় খাবার ও দ্রব্য কিনে আনা যেতে পারে।

🔵মাস্ক,ডিসপোজেবল গ্লাভস, সম্ভব হলে চশমা এবং ছেলেরা টুপি পরে  এবং মেয়েরা বাজারে গেলে মাথায় ওড়না/স্কার্ফ ব্যবহার করতে পারেন।

🔵 বাজার করার সময় দোকানদার বা অন্য ক্রেতাদের থেকে নির্দিষ্ট দুরত্ব ( কমপক্ষে ৩ ফুট) বজায় রাখার চেষ্টা করুন।

🔵 যেসব জায়গায় হাত দিয়ে স্পর্শ করা হয়েছে এমন জায়গা যেমন: রেলিং,দরজা, বাজারের ব্যাগ,ট্রলি,বাস্কেট  এবং যেসব পন্য কিনেছেন তা পুর্বের কোন ব্যক্তি হয়তো নাড়াচাড়া করেছেন।তাই সেসব জায়গা থেকেও সংক্রমণ হতে পারে।আবার টাকা উত্তোলন ও প্রদানের সময়ও টাকা থেকে ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।তাই যতটা সম্ভব জিনিস কম স্পর্শ করে বাজারের কাজ সারতে হবে এবং টাকা দোকানদার /ক্যাশ কাউন্টারে প্রদানের সময় সচেতন থাকতে হবে।সম্ভব হলে কার্ডে টাকা প্রেরন করুন।

🔵 বাসায় ফিরে জুতোগুলো অবশ্যই দরজার বাইরে রাখতে হবে। 

🔵 বাসায় এসে বাজারের ব্যাগ /প্যাকেটগুলি অন্য কাউকে ধরতে না দেয়াই ভাল।

🔵  বাসায় ফিরে অবশ্যই গ্লাভস গুলো ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে সাবান দিয়ে ভাল করে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুয়ে নিন।

🔵 সম্ভব হলে আরেক জোড়া নতুন গ্লাভস পড়ে পাউরুটি, বিস্কুট, আটার প্যাকেট, দুধের প্যাকেট,তেলের বোতল ইত্যাদি প্যাকেট /বোতলজাত পন্য জীবানু নাশক দিয়ে মুছে নিতে হবে।অথবা অন্য পরিস্কার কন্টেইনারে ঢেলে প্যাকেট ফেলে দিতে হবে।

🔵ডাল,লবন,চিনি,গুড়ো মশলা ইত্যাদি প্যাকেট থেকে বের করে পরিস্কার কন্টেইনার বা বোয়ামে ঢেলে সংরক্ষণ করতে হবে এবং প্যাকেট ফেলে দিতে হবে।

🔵অনেকেই বাজারের ব্যাগ জমিয়ে রাখেন কিন্তু এখন তা আর করা উচিত হবে না।

🔵যেই শুকনো খাবারগুলো সহজেই সংরক্ষণ করা যায় যেমন:আলু,তেল,চালের বস্তা,পেয়াজ,আদা,রসুন ইত্যাদি স্টোর রুমে/বারান্দায় বা ঘরের নির্দিষ্ট পরিস্কার জায়গায় রেখে দিতে পারেন ৩/৪ দিন।আর আর অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীর ব্যাগ বাসায় ঢোকানোর পূর্বে দরজার বাইরে ডাস্টবিনে ফেলে দিন।

🔵 কাচা শাকসবজি ও ফলমুল আলাদা আলাদা পানিপুর্ন পাত্রে ডুবিয়ে দিন।অতঃপর ঠান্ডা পানির প্রবাহে (running water) ভালমত কচলে ধুয়ে নিন।তারপর ভাল করে মুছে/শুকিয়ে ফ্রিজে নির্দিষ্ট জায়গায় সংরক্ষণ করুন।

🔵 কাচা মাছ,মাংস আলাদা স্থানে ভালমতো ধুয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।

🔵 ডিম ভালমত ধুয়ে সংরক্ষণ করুন।আর রান্নার সময় ডিম ভালভাবে সেদ্ধ করে খেতে হবে।মাছ,মাংসও ভালমতো যেন সেদ্ধ হয় সেই দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।

🔵 ফলমুল ও শাকসবজি ট্যাপের /কলের পানির প্রবাহে ভালমতো ধুতে হবে।অনেকে ফলমুল ও শাকসবজি ধুতে ডিটারজেন্ট /সাবান ব্যবহার করছেন যা মোটেও ঠিক নয়।এতে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।তাই সবজি ও ফল প্রবাহমান পানিতে ধুলেই যথেষ্ট। আর সন্দেহ থাকলে পানিতে ভিনেগার মিশিয়ে কিছুক্ষন ডুবিয়ে রাখতে পারেন। পানি ও ভিনেগার মিশিয়ে ফল ডুবিয়ে রাখলে ৯৮% ব্যাকটেরিয়া ও কিছু ভাইরাস এবং কীটনাশক চলে যাবে।তবে ভিনেগার রেজিস্টার্ড ডিসইনফেক্টেন্ট নয় এবং এতে করোনা ভাইরাস যাবে কিনা তাও জানা যায়নি।তবে ভালমতো শাকসবজি ধুয়ে এবং ভালভাবে রান্না করলে রান্নার তাপমাত্রায় করোনা ভাইরাস মারা যাবে।

🔵 রান্না করা ও পরিবেশনের আগে হাত ভাল করে ধুতে হবে।
যিনি খাদ্য প্রস্তুত করবেন তার হাতের নখ ছোট করে রাখবেন। কারন বড় নখের ভেতর অনেক সময় সাবান প্রবেশ করে না ফলে নখের ভেতর ভাইরাস থেকে যেতে পারে।তাই সকলকেই এই সময় নখ ছোট রাখতে হবে।

🔵রান্নার ও কাটার কাজে ব্যবহৃত ছুড়ি,বটি,কাটার বোর্ড,হাড়ি,পাতিল ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং জীবানুমুক্ত করতে হবে।রান্না শেষে রান্নাঘরের মেঝে,কাটার স্থান,কেবিণেট ইত্যাদি সাবান পানি বা সম্ভব হলে ব্লিচিং পানি দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।

🔵 এই সময়ে বাইরের বা রেস্তোরাঁর খাবার এড়িয়ে বাসার খাবার খাওয়া ভাল।যদিও বাইরের খাবার খেতে বাধা নেই তবুও বাইরের খাবার যিনি প্রস্তুত করছেন তিনি সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন কিনা তা আসলে জানা সম্ভব নয় ।তাই ঘরে তৈরি ফ্রেশ খাবার খাওয়াই এখন শ্রেয়।

🔵 অসুস্থ ব্যক্তির দ্বারা খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশন করা মোটেও ঠিক হবে না।

🔵 বাজার থেকে এসে অবশ্যই পরনের কাপড় সাবান পানিতে ডুবিয়ে দিতে হবে।এবং গোসল করে নিতে হবে।

🔵 বাজার থেকে এসে মানিব্যাগ, ঘড়ি,চশমা, মোবাইল জীবানুনাশক/এলকোহল যুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে মুছে নিতে হবে।

Post a Comment

0 Comments